কাব্য, সংগীত হতে উৎসারিত, আর নাটক কবিতার আত্মজা। এই সম্পর্ক মেনে নিলে নাটক একই সঙ্গে কাব্য এবং সংগীতকে ধারণ করে চলে। আধুনিক নাটকে একইসাথে যুক্ত হয়েছে গদ্যের সাবলীলতা।
কাব্য, সংগীত হতে উৎসারিত, আর নাটক কবিতার আত্মজা। এই সম্পর্ক মেনে নিলে নাটক একই সঙ্গে কাব্য এবং সংগীতকে ধারণ করে চলে। আধুনিক নাটকে একইসাথে যুক্ত হয়েছে গদ্যের সাবলীলতা। অজয় শুক্লার ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ সংগীত, কাব্য এবং নাটকের সেই সম্পর্ককে চারটি দৃশ্যে বেঁধে ফেলেছে। নাট্যকার অজয় শুক্লা নাটকটি রচনা করেছেন হিন্দি ভাষায়। মূল হিন্দি থেকে বাংলা ভাষায় আমাদের কাছে নাটকটি পৌঁছলেন অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী। কাজটি যে কতটা কঠিন...
মেক্সিকান কবি অক্তাভিও পায সতর্ক করে দিচ্ছেন যে কবিতা তথা সাহিত্যকর্ম জন্মগতভাবেই অনুবাদ-অযোগ্য। কারণ অনুবাদ যদি ভাষা রূপান্তর হয় তাহলে কবি ইতোমধ্যেই তাঁর মনের ভাষাকে লেখনীর ভাষায় রূপান্তরিত করে ফেলেছেন। সেই ভাষাকে পুনরায় আরেক ভাষায় রূপান্তর শ্রমসাধ্যই শুধু নয়, প্রবল মনের জোরও দাবী করে।
অধ্যাপক সামাদী হিন্দি এবং উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের একজন সমঝদার রসিকই শুধু নন, উপমহাদেশের এই দু ভাষার সাহিত্যকর্মের চর্চাও করছেন দীর্ঘকাল ধরে। হিন্দি এবং উর্দু এই দুই ভাষাতেই অধ্যাপক সামাদীর ঈর্ষণীয় দক্ষতা রয়েছে। তিনি হিন্দি এবং উর্দু সাহিত্য মূল ভাষায় পড়েন, দেবনাগরী এবং আরবি লিপি পাঠে এবং লেখনীতে তিনি দক্ষ। কিন্তু, সেসব কিছুকে ছাপিয়ে যায় তাঁর এই ভাষাদ্বয়ে লিখিত সাহিত্যকর্মের প্রতি ভালোবাসা, এই দুই ভাষার কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, গীতিকারদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং মুগ্ধতা। তিনি নজম, গজল, নাটক, কথাসাহিত্য, ধ্রুপদী কিংবা আধুনিক, এই দুই ভাষায় লিখিত, প্রকাশিত সব ধরনের সাহিত্যকর্মের রস আস্বাদনে পারঙ্গম। অধ্যাপক সামাদী উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হিন্দি এবং উর্দু গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করেছেন, যেগুলি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রকাশনী প্রকাশ করেছে। তাঁর এই প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্দেশ্য হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় রচিত সাহিত্যের ভাণ্ডার বাংলাভাষী পাঠকের কাছে মেলে ধরা। এই প্রচেষ্টায় তিনি নিরলস।
নাট্যকার অজয় শুক্লার হিন্দি ভাষায় রচিত ‘দুসরা অধ্যায়ের’ বাংলা ভাষায় অনুবাদ ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ অধ্যাপক সামাদীর সেই নিরলস প্রচেষ্টার অংশ। অজয় শুক্লা ১৯৯৩ সালে এই নাটকটির জন্য ‘দিল্লী সাহিত্য কলা পরিষদ নাট্যকার’ পুরস্কার অর্জন করেন, এবং ১৯৯৮ সালে নাটকটি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে প্রচারিত হয়। চারটি দৃশ্যের এই নাটকে চরিত্র মাত্র দুটি। স্থানিক পরিবর্তন তেমন নেই। আছে বাস্তব। আছে স্বপ্ন। আছে বাস্তবকে অতিক্রম করতে চাওয়ার বেদনাময় আকুতি, কিংবা বাস্তবকে মেনে নেবার বা এড়িয়ে যাবার অহংকারের পর্দা। আছে অত্যন্ত সহজ ভাষায় আমাদের জীবনের গূঢ়তম দর্শনকে টেনে, হিঁচড়ে সামনে নিয়ে আসা। কিংবা নতুন শুরু। হয়ত আমরা কেউ কেউ এমন, হয়ত কেউই এমন নই। কিন্তু, এমন কোন না কোন বাস্তব এবং স্বপ্ন আমাদের সবার জীবনকেই কখনো না কখনোও নাড়া দিয়ে গেছে।
ফরাসি কবি মালার্মে বলেন, “মূলে যা আছে, আর যা নেই অনুবাদককে তার সব কিছুই অনুভব করতে পারতে হয়।”
অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী ‘দুসরা অধ্যায়ের’ বাংলা অনুবাদের ছত্রে ছত্রে সেই অনুভূতির পরশ রেখে গেছেন।
কাব্য, সংগীত হতে উৎসারিত, আর নাটক কবিতার আত্মজা। এই সম্পর্ক মেনে নিলে নাটক একই সঙ্গে কাব্য এবং সংগীতকে ধারণ করে চলে। আধুনিক নাটকে একইসাথে যুক্ত হয়েছে গদ্যের সাবলীলতা।
By সফিকুন্নবী সামাদী
Category: নাটক,অনুবাদ
কাব্য, সংগীত হতে উৎসারিত, আর নাটক কবিতার আত্মজা। এই সম্পর্ক মেনে নিলে নাটক একই সঙ্গে কাব্য এবং সংগীতকে ধারণ করে চলে। আধুনিক নাটকে একইসাথে যুক্ত হয়েছে গদ্যের সাবলীলতা। অজয় শুক্লার ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ সংগীত, কাব্য এবং নাটকের সেই সম্পর্ককে চারটি দৃশ্যে বেঁধে ফেলেছে। নাট্যকার অজয় শুক্লা নাটকটি রচনা করেছেন হিন্দি ভাষায়। মূল হিন্দি থেকে বাংলা ভাষায় আমাদের কাছে নাটকটি পৌঁছলেন অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী। কাজটি যে কতটা কঠিন...
মেক্সিকান কবি অক্তাভিও পায সতর্ক করে দিচ্ছেন যে কবিতা তথা সাহিত্যকর্ম জন্মগতভাবেই অনুবাদ-অযোগ্য। কারণ অনুবাদ যদি ভাষা রূপান্তর হয় তাহলে কবি ইতোমধ্যেই তাঁর মনের ভাষাকে লেখনীর ভাষায় রূপান্তরিত করে ফেলেছেন। সেই ভাষাকে পুনরায় আরেক ভাষায় রূপান্তর শ্রমসাধ্যই শুধু নয়, প্রবল মনের জোরও দাবী করে।
অধ্যাপক সামাদী হিন্দি এবং উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের একজন সমঝদার রসিকই শুধু নন, উপমহাদেশের এই দু ভাষার সাহিত্যকর্মের চর্চাও করছেন দীর্ঘকাল ধরে। হিন্দি এবং উর্দু এই দুই ভাষাতেই অধ্যাপক সামাদীর ঈর্ষণীয় দক্ষতা রয়েছে। তিনি হিন্দি এবং উর্দু সাহিত্য মূল ভাষায় পড়েন, দেবনাগরী এবং আরবি লিপি পাঠে এবং লেখনীতে তিনি দক্ষ। কিন্তু, সেসব কিছুকে ছাপিয়ে যায় তাঁর এই ভাষাদ্বয়ে লিখিত সাহিত্যকর্মের প্রতি ভালোবাসা, এই দুই ভাষার কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, গীতিকারদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং মুগ্ধতা। তিনি নজম, গজল, নাটক, কথাসাহিত্য, ধ্রুপদী কিংবা আধুনিক, এই দুই ভাষায় লিখিত, প্রকাশিত সব ধরনের সাহিত্যকর্মের রস আস্বাদনে পারঙ্গম। অধ্যাপক সামাদী উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হিন্দি এবং উর্দু গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করেছেন, যেগুলি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রকাশনী প্রকাশ করেছে। তাঁর এই প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্দেশ্য হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় রচিত সাহিত্যের ভাণ্ডার বাংলাভাষী পাঠকের কাছে মেলে ধরা। এই প্রচেষ্টায় তিনি নিরলস।
নাট্যকার অজয় শুক্লার হিন্দি ভাষায় রচিত ‘দুসরা অধ্যায়ের’ বাংলা ভাষায় অনুবাদ ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ অধ্যাপক সামাদীর সেই নিরলস প্রচেষ্টার অংশ। অজয় শুক্লা ১৯৯৩ সালে এই নাটকটির জন্য ‘দিল্লী সাহিত্য কলা পরিষদ নাট্যকার’ পুরস্কার অর্জন করেন, এবং ১৯৯৮ সালে নাটকটি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে প্রচারিত হয়। চারটি দৃশ্যের এই নাটকে চরিত্র মাত্র দুটি। স্থানিক পরিবর্তন তেমন নেই। আছে বাস্তব। আছে স্বপ্ন। আছে বাস্তবকে অতিক্রম করতে চাওয়ার বেদনাময় আকুতি, কিংবা বাস্তবকে মেনে নেবার বা এড়িয়ে যাবার অহংকারের পর্দা। আছে অত্যন্ত সহজ ভাষায় আমাদের জীবনের গূঢ়তম দর্শনকে টেনে, হিঁচড়ে সামনে নিয়ে আসা। কিংবা নতুন শুরু। হয়ত আমরা কেউ কেউ এমন, হয়ত কেউই এমন নই। কিন্তু, এমন কোন না কোন বাস্তব এবং স্বপ্ন আমাদের সবার জীবনকেই কখনো না কখনোও নাড়া দিয়ে গেছে।
ফরাসি কবি মালার্মে বলেন, “মূলে যা আছে, আর যা নেই অনুবাদককে তার সব কিছুই অনুভব করতে পারতে হয়।”
অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী ‘দুসরা অধ্যায়ের’ বাংলা অনুবাদের ছত্রে ছত্রে সেই অনুভূতির পরশ রেখে গেছেন।